মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৩ পূর্বাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি॥ বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, প্রবল বর্ষণ, অমাবস্যার প্রভাবে নদ-নদীতে অধিক উচ্চতার জোয়ারের তোড়ে বরগুনায় ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ শুরু করেছে পাউবো।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, প্রবল বর্ষণ ও অমাবস্যার প্রভাবে অধিক উচ্চতায় জোয়ার প্রবাহিত হওয়ায় বরগুনার পাঁচ উপজেলায় প্রায় ৯ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বরগুনা কাযালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ২২ টি পোল্ডারে ৯০৫ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে লঘুচাপ,প্রবল বৃষ্টি ও অমাবস্যার প্রভাবে নদীতে অধিক উচ্চতার জোয়ারের তোড়ে প্রায় সাড়ে ৮ কিলোমিটার বাঁধের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এরইমধ্যে বরগুনা সদর তালতলী পাথরঘাটা উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের সংস্কার কাজ শুরু করা হয়েছে। বাকি স্থানগুলোতেও যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বরগুনা সদর উপজেলার কুমড়াখালী এলাকার উচ্চ জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত কাজ শুরু করেছেন শ্রমিকরা। তারা বাঁশের বেষ্টনী দিচ্ছেন। এছাড়া তালতলী উপজেলা তেঁতুল বাড়িয়া এলাকায় এক কিলোমিটারের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের কাজ শুরু করেছেন পাউবোর কর্মকর্তারা।
সদর উপজেলার গুলিশাখালী গ্রামের বাসিন্দা খাইরুল আলম বলেন, প্রতি বছর বাঁধ সংস্কারের নামে কোটি কোটি টাকা অপচয় হচ্ছে লোক দেখানো কাজ করে। প্রতিবছর ঝড় বন্যায় যখন বাঁধ ভাঙে, সে সময় সবার টনক নড়ে। এরপর আর খবর থাকে না।
শাহাদাত হোসেন নামের এক বাসিন্দা বলেন, ঝড় এলেই এসব বাঁধ দিয়ে আমাদের এলাকায় পানি প্রবেশ করে। এতে বাড়ি-ঘর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়। এ সময় দু’বেলা জোয়ারের পানিতে ভাসছি। আমাদের ত্রাণ লাগবে না মজবুত বাঁধ দরকার, সরকারের কাছে এটাই দাবি।
ভাঙনকবলিত জায়ালভাঙা এলাকায় বাসিন্দা আকলিমা বেগম বলেন, নদী পাড়ের মানুষ মোরা ঝড় বন্যা, উচ্চ জোয়ারের পানিতে তলিয়ে থাকি। আমরা এই অবস্থা থেকে মুক্তি চাই। আমাদের মত গরিব মানুষের কথা কেউ ভাবে না।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বরগুনা কার্যালয়ের তালতলী উপজেলা দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম বলেন, তালতলী উপজেলার তেঁতুলবেড়িয়া গ্রামে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় প্রায় এক কিলোমিটার বাঁধ জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু করেছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বরগুনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার আলম বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ, প্রবল বর্ষণ ও অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলের নদ-নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা এসব বাঁধের সংস্কার কাজ শুরু করেছি।
বরগুনার ডিসি মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত ২১ কিলোমিটার বাঁধের সংস্কার কাজ চলমান, অধিক উচ্চতার জোয়ারের তোড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ চিহিৃত করে সংস্কারের ব্যবস্থা করবো। এরইমধ্যে বেশ কিছু স্থানে জরুরি ভিত্তিতে মেরামত শুরু করা হয়েছে।
Leave a Reply